মানবকল্যাণ অলৌকিক কিছু নয় , তা জাগতিক মানবধর্ম ।
‘ মানব – কল্যাণ ‘ প্রবন্ধে মানবকল্যাণ ধারণাটির তাৎপর্য বিচার করা হয়েছে । মানবকল্যাণ অর্থ করুণাবশত দান – খয়রাত করা নয় । মানবকল্যাণ হচ্ছে মানুষের সার্বিক মঙ্গলের প্রয়াস ।
মানবকল্যাণের লক্ষ্য হচ্ছে অবমাননাকর অবস্থা থেকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় মানুষের উত্তরণ ঘটানো ।
ইতিহাস বিদদের মতে , মুক্তবুদ্ধির সহায়তায় কল্যাণময় পৃথিবী রচনা করা সম্ভব । মানব কল্যাণের প্রকৃত ধারণা লাভ করতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে ।
সমস্যা সমাধানের জন্য মানুষকে বৈজ্ঞানিক , ( Rational ) ও সুবুদ্ধি – নিয়ন্ত্রিত হতে হবে ।
“ মানব – কল্যাণ— এ শিরোনাম আমার দেওয়া নয় ।
” মানবকল্যাণ বলতে মানুষের জীবনের উৎকর্ষের জন্য মানুষের উপকার করাকে বোঝায় ।
মানব কল্যাণ কথাটা সস্তা ও মামুলি অর্থেই আমরা প্রচলিত ধারণায় ব্যবহার করে থাকি । যে কারণে এটি প্রবন্ধকারের দেওয়া শিরোনাম নয় । “ ওপরের হাত সব সময় নিচের হাত থেকে শ্রেষ্ঠ । ” ওপরের হাত বলতে দাতার হাতকে বোঝায় ।
এই হাত থেকে অনুগ্রহ বর্ষণ করা হয় । অন্যদিকে নিচের হাত বলতে গ্রহীতার হাতকে বোঝায় , মানুষ যে হাত পেতে কারও দান গ্রহণ করে ।
“ সে সোপান রচনাই সমাজ আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব । ”
মানব কল্যাণের প্রাথমিক সোপান রচনা সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব ।
সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে মানুষের অধিকার ও মর্যাদা সমান । মানুষ যাতে মানবিক বৃত্তি বিকাশের পথ অনুসরণ করে বেড়ে উঠতে পারে , সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়াই মানবকল্যাণের প্রাথমিক কাজ ।
সত্যিকার মানব – কল্যাণ মহৎ চিন্তা – ভাবনারই ফসল । ” কালে কালে জগতের মহৎ ব্যক্তিরা মানবকল্যাণের জন্য চিন্তা ভাবনা করেছেন এবং বাস্তবে প্রতিফলন ঘটিয়ে তার আদর্শ রেখে গেছেন । বিদ্যাপতি , চণ্ডীদাস , লালন থেকে আধুনিককালের রবীন্দ্রনাথ , নজরুল সবাই মানবিক চেতনার উদাত্ত সত্যিকার মানব কল্যাণ তাঁদেরই মহৎ চিন্তা – ভাবনার ফসল । স্রেফ সদিচ্ছা দ্বারা মানব – কল্যাণ সাধিত হয় না । ” লালন করে তা কার্যকর না করলে মানবকল্যাণ সাধন করা যায় না । মানবকল্যাণের জন্য প্রয়োজন উদ্যোগ , সঠিক পরিকল্পনা , স্লোগান ও কর্মনিষ্ঠা । তাহলেই সদিচ্ছা সফলতা লাভ করে ।
প্রশ্ন :। কোন কথাটি মামুলি অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ?
উত্তর : মানব কল্যাণ ‘ কথাটি ।
প্রশ্ন : একমুষ্টি ভিক্ষা দেওয়াকে আমরা সাধারণভাবে কী মনে করে থাকি ?
উত্তর : মানব কল্যাণ
প্রশ্ন : মানুষ যে হাত পেতে গ্রহণ করে , সেটি কোন হাত ?
উত্তর : নিচের হাত ।
প্রশ্ন :। অনুগ্রহকারী আর অনুগৃহীতের মধ্যে কোন দিক থেকে তফাত ?
উত্তর : অনুগ্রহকারী আর অনুগৃহীতের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও মানব মর্যাদার দিক থেকে তফাত ।
প্রশ্ন :। জাতির যৌথ জীবন আর যৌথ চেতনার প্রতীক কী ?
উত্তর : রাষ্ট্র জাতির যৌথ জীবন আর যৌথ চেতনার প্রতীক ।
প্রশ্ন : রাষ্ট্রের বৃহত্তর দায়িত্ব কী ?
উত্তর : রাষ্ট্রের বৃহত্তর দায়িত্ব জাতিকে আত্মমর্যদাসম্পন্ন করে ।
প্রশ্ন :। মানবকল্যাণের উৎস কিসের মধ্যে নিহিত ?
উত্তর : মানবকল্যাণের উৎস মানুষের মর্যাদাবোধ আর মানবিক চেতনা বিকাশের মধ্যে নিহিত ।
প্রশ্ন : ‘ মানব – কল্যাণ ‘ প্রবন্ধে একদিন এক ব্যক্তি কার কাছে ভিক্ষা চাইতে এসেছিল ?
উত্তর : ইসলামের নবির কাছে এক ব্যক্তি ভিক্ষা চাইতে এসেছিল । দিয়েছিলেন ?
প্রশ্ন : ‘ মানব – কল্যাণ ‘ প্রবন্ধ অনুসারে নবি ভিক্ষুককে কী
উত্তর : নবি ভিক্ষুককে একখানা কুড়াল কিনে দিয়েছিলেন ।
প্রশ্ন :। মানবকল্যাণের প্রাথমিক সোপান কী ?
উত্তর : মানবিক বৃত্তি বিকাশের যথাযথ ক্ষেত্র রচনা করা ।
প্রশ্ন :। মানবকল্যাণের প্রাথমিক সোপান রচনার দায়িত্ব কার ?
উত্তর : মানবকল্যাণের প্রাথমিক সোপান রচনার দায়িত্ব সমাজ ও রাষ্ট্রের ।
প্রশ্ন :। মানুষের ভবিষ্যৎ জীবনের সূচনা হয় কোথা থেকে ?
উত্তর : মানুষের ভবিষ্যৎ জীবনের সূচনা হয় পরিবার থেকে ।
প্রশ্ন :। প্রত্যেক মানুষ কিসের সঙ্গে সম্পর্কিত ?
উত্তর : প্রত্যেক মানুষ সমাজের সঙ্গে সম্পর্কিত ।
প্রশ্ন :। সামগ্রিকভাবে সমাজের ভালো – মন্দের সঙ্গে কোনটি
উত্তর : মানবকল্যাণ সমাজের ভালো – মন্দের সঙ্গে সংযুক্ত ।
প্রশ্ন :। কোন মনোভাব নিয়ে কারও কল্যাণ করা যায় না ?
উত্তর : বিভক্তিকরণের মনোভাব নিয়ে কারও কল্যাণ করা যায় না ।
প্রশ্ন :। সত্যিকার মানবকল্যাণ কিসের ফসল ?
উত্তর : সত্যিকার মানবকল্যাণ মহৎ চিন্তাভাবনার ফসল ।
প্রশ্ন :। কারা মানবিক চিন্তা আর আদর্শের উত্তরাধিকার রেখে গেছেন ?
উত্তর : বাংলাদেশের মহৎ প্রতিভাবান সবাই ।
প্রশ্ন :। মহৎ প্রতিভাবানদের উত্তরাধিকারকে আমরা কী করতে পারিনি ?
উত্তর : আমাদের জীবনে প্রয়োগ করতে পারিনি ।
প্রশ্ন :। কারা মানবিক চেতনার উদাত্ত কণ্ঠস্বর ?
উত্তর : বিদ্যাপতি , চণ্ডীদাস , রবীন্দ্রনাথ , নজরুল প্রমুখ মানবিক চেতনার উদাত্ত কণ্ঠস্বর ।
প্রশ্ন :। “ তুমি অধম , তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন ? ” কার উক্তি ?
উত্তর : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ।
প্রশ্ন :। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে কী করতে হবে ?
উত্তর : আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে পাল্টাতে হবে ।
প্রশ্ন :। কীভাবে সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে ?
উত্তর : নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে ।
প্রশ্ন :। জোড়াতালি দিয়ে কী করা যায় না ?
উত্তর : জোড়াতালি দিয়ে কোনো সমস্যার সমাধান করা যায় না ।
প্রশ্ন :। কীভাবে কল্যাণময় পৃথিবী রচনা করা সম্ভব ?
উত্তর : মুক্তবুদ্ধির সহায়তায় সুপরিকল্পিত পথে ।